এখুনি ক্রয় করুনঃ
আব্রাহাম লিংকন এর জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৮০৯ খ্রীস্টাব্দে লারু কাউন্টি, কেনটাকি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাকে হত্যা করা হয় ১৫ এপ্রিল, ১৮৬৫ খ্রীস্টাব্দে পিটারসেন হাউস, ওয়াশিংটন, ডিসি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁর বাবা হলো থমাস লিংকন এবং মা ছিলেন ন্যান্সি হ্যাঙ্কস।
আব্রাহাম লিংকন একজন রূচিপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন যার পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর একটি চিঠির দ্বারা। যেটি তিনি পাঠিয়েছিলেন তাঁর পুত্রের শিক্ষকের কাছে।
মাননীয় মহাশয়,
আমার পুত্রকে জ্ঞানার্জনের জন্য আপনার কাছে প্রেরণ করলাম। তাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন-এটাই আপনার কাছে আমার বিশেষ দাবি।
আমার পুত্রকে অবশ্যই শেখাবেন- সব মানুষই ন্যায়পরায়ণ নয়, সব মানুষই সত্যনিষ্ঠ নয়। তাকে এ-ও শেখাবেন প্রত্যেক বদমায়েশের মাঝেও একজন বীর থাকতে পারে, প্রত্যোক স্বার্থপর রাজনীতিকের মাঝেও একজন নিঃস্বার্থ নেতা থাকে।
তাকে শেখাবেন প্রত্যেক শত্রুর মাঝে একজন বন্ধু থাকে। আমি জানি এটা শিখতে তার সময় লাগবে, তবুও যদি পারেন তাকে শেখাবেন পাঁচটি ডলার কুড়িয়ে পাওয়ার চেয়ে একটি উপার্জিত ডলার অধিক মূল্যবান।
এ-ও তাকে শেখাবেন, কীভাবে পরাজয়কে মেনে নিতে হয় এবং কীভাবে বিজয়োল্লাস উপভোগ করতে হয়। হিংসা থেকে দূরে থাকার শিক্ষাও তাকে দেবেন। যদি পারেন নীরব হাসির গোপন সৌন্দর্য তাকে শেখাবেন। সে যেন আগ-ভাগেই এ কথা বুঝতে শেখে যারা পীড়নকরী তাদেরই সহজে কাবু করা যায়। বইয়ের মাঝে কি রহস্য লুকিয়ে আছে তা-ও তাকে বুঝতে শেখাবেন।
আমার পুত্রকে শেখাবেন, বিদ্যালয়ে নকল করার চেয়ে অকৃতকার্য হওয়া অনেক বেশি সম্মানজনক। নিজের ওপর তার যেন সুমহান আস্থা থাকে। এমনকি সবাই যদি সেটাকে ভুলও মনে করে। তাকে শেখাবেন ভদ্রলোকের প্রতি ভদ্র আচরণ করতে, কঠোরদের প্রতি কঠোর হতে।
আমার পুত্র যেন এ শক্তি পায় হুজুগে মাতাল জনতার পদাঙ্ক অনুসরণ না করার। সে যেন সবার কথা শোনে এবং তা সত্যের পর্দায় ছেঁকে যেন ভালোটাই শুধু গ্রহণ করে- এ শিক্ষাও তাকে দেবেন সে যেন শেখে দুঃখের মাঝে কিভাবে হাসতে হয় আবার কান্নার মাঝে যে লজ্জা নেই-এ কথা তাকে বুঝতে শেখাবেন।
যারা নির্দয়, নির্মম তাদের সে যেন ঘৃণা করতে শেখে আর অতিরিক্ত আরাম-আয়েশ থেকে সাবধান থাকে। আমার পুত্রের প্রতি সদয় আচরণ করবেন কিন্তু সোহাগ করবেন না। কেননা আগুনে পুড়েই ইস্পাত খাঁটি হয়।
আমার সন্তানের যেন অধৈর্য হওয়ার সাহস না থাকে, থাকে যেন তার সাহসী হওয়ার ধৈর্য। তাকে এ শিক্ষাও দেবেন নিজের প্রতি তার যেন সুমহান আস্থা থাকে আর তখনই তার সুমহান আস্থা থাকবে মানবজাতির প্রতি।
- সশ্রদ্ধ সালাম, আব্রাহাম লিংকন।
আব্রাহাম লিংকন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাস প্রথার অবসান ঘটান ও দাসদের মুক্তির ব্যবস্থা করেন। দাস নিয়ে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় তিনি ১৮৬৫ সালের ১৫ এপ্রিল আততার হাতে তুলে ধরেন। তাঁর জীবদ্দশায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা হল ১৯ নভেম্বর ১৮৬৩ সালে এক সমাবেশে তাঁর সংক্ষিপ্ত ও দুনিয়া কাঁপানো বিখ্যাত ভাষণ।
দুই মিনিটের মধ্যে ২৭২ শব্দের এই ফাস্ট ভাষণটি ইতিহাসের পাতায় যুক্ত হয়েছে। এটি সর্বোচ্চ ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ভাষণ। এখানে তিনি গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটি ফুটিয়ে তুলেছেন। সেই ভাষণটির বাংলা অর্থ এমনটাই দ্বারাই ‘গণতান্ত্রিক জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা সরকার, জনগণের জন্য সরকার’।
নৈতিক, সাংস্কৃতিক, সাংবিধানিক এবং রাজনৈতিক সঙ্কটে তিনি আমেরিকাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ইউনিয়ন সংরক্ষণ, দাসত্ব বিলোপ, ফেডারেল সরকারকে মজবুত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে আধুনিকীকরণে সফল হন।
এক সময় তিনি পার্টির জন্য আট বছর রাষ্ট্রের বাইরের নির্ধারক কাজ করেন এবং দুই তিন বছর ক্ষমতাসীন হিসেবে কাজ করেন। ডেমক্রেটি করা প্রেইরি ল্যান্ডে দাসপ্রথার জন্য আব্রাহাম লিংকন ক্ষিপ্ত হয়ে বিরোধিতা করেন। তিনি প্রকৌশলে স্বেচ্ছাবী এবং মিলিশিয়া গঠন করেন এবং ঐক্য ধরে রাখতে বিদ্রোহদের দমনে আহ্বান জানান।
এখানে আব্রাহাম লিংকনের ১৫ টি বিখ্যাত উক্তি রয়েছে। জীবনে একবার হলেও এগুলো পড়া উচিৎ। তিনি খুবই জনপ্রিয় ও বিখ্যাত একজন মনিষী ছিলেন। তাঁর প্রত্যেক টা উক্তিই খুবই সুন্দর ও বাস্তব মুখী। তিনি এমেরিকার ১৬ তম রাষ্ট্রপতি ছিলেন।
তিনি ছিলেন অত্যন্ত সুদক্ষ ও সাহসী একজন মানুষ। তাঁর কথা গুলোর মূল্য অনেক বেশী। তাহলে দেখে নেয়া যাক তার কিছু বিখ্যাত ও জনপ্রিয় বাণী। যেগুলো পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই জনপ্রিয়। উক্তিগুলো হলো,
১. আমি যা যা করি বা যা আশা করি তার সবই আমার মায়ের কাছে ঋণী।
২. যার মা আছে, সে কখনো গরীব নয়।
৩. যারা অপেক্ষা করে তারাই পায়, আর তারাই হারায় যারা তাড়াহুড়া করে।
৪. শাস্তির চেয়ে ক্ষমা মহৎ।
৫. সবাইকে বিশ্বাস করা বিপদজনক, কিন্তু কাউকেই বিশ্বাস না করা আরো বেশী বিপদজনক।
৬. যথাস্থানে পা রেখেছো কিনা তা আগে নিশ্চিত হও, তারপর দৃঢ়ভাবে দাঁড়াও।
৭. আমি ধীরগতিতে অগ্রসর হই, কিন্তু কখনও পিছু হটি না।
৮. চরিত্র হলো গাছের মত, পরিচিতি ছায়ার মত।
৯. তুমি যা ই হও না কেন- ভালো কিছু হও।
১০. আমি প্রস্তুতি নিয়ে রাখবো এবং কোনও দিন আমারও সুযোগ আসবে।
১১. স্বীকৃতি না পেলে ভেঙ্গে পড়বেন না, তবে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য হওয়ার চেষ্টা করতে থাকুন।
১২. যদি আমার কাছে একটি গাছ কাটার জন্য আট ঘন্টা সময় থাকে, তাহলে আমি কুড়াল ধার করানোর জন্য সাত ঘন্টা ব্যয় করবো।
১৩. আমি হাসি কারণ আমি কাঁদলে চলবে না।
১৪. আজকে ফাঁকি দিয়ে আপনি আগামীকালের দায়িত্ব থেকে পালাতে পারবেন না।
১৫. কোন মানুষ কি কারণে রেগে যাচ্ছে তা দেখে তার চরিত্র সম্পর্কে জানা যায়।
আরও পড়ুনঃ নেলসন ম্যান্ডেলার সংক্ষিপ্ত জীবনী এবং তাঁর ১৫টি বিখ্যাত উক্তি