‘একা’ কিন্তু ‘একলা’ নয় – সুচিত্রা সেন (৬ এপ্রিল, ১৯৩১ - ১৭ জানুয়ারি, ২০১৪)
সুচিত্রার মোহমায়ায় এখনো আপামর জনসাধারণ উন্মাদ। এখনো তাঁকে ঘিরে অদম্য কৌতুহল, অন্তহীন গুজব। তিনি শহর কলকাতার এক কোলাহল মুখর সমুদ্রে যেন এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপবাসিনী, স্বেচ্ছানির্বাসিতা একজন।

পর্দায় হাজার হাজার দর্শকের সামনে বিরাজমান সুচিত্রা তাঁর জীবন কথা জন সাধারণের গোচরে আনার বিরোধী ছিলেন। তাঁর অন্যতম জীবনীকার গোপালকৃষ্ণ রায় এর কথায় - সুচিত্রা বলেন, “আমি আপন মনোবিহারিনী হয়ে থাকতে চাই। মনের দরজায় তাই তালা লাগিয়ে দিয়েছি। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তালা লাগানো থাকবে। চাবি তো হারিয়ে ফেলেছি।”
“চাবি হারিয়ে ফেলেছ তাহলে ভাঙছো না কেন?”
সুচিত্রার জবাব, “ভাঙা সহজ, জোড়া নয়। তাই তা ভাঙতে চেয়ো না।”
সুচিত্রার ভুবন মোহিনী হাসি- এই হাসি তাঁর সহজাত। চেষ্টা করে কি এই হাসি আনা যায়! সুচিত্রা বলেন, “হ্যাঁ, এই হাসি আমি পেয়েছিলাম, তাই আজ আমি সুচিত্রা। বলেন কিন্তু ‘রমা সেন’ গম্ভীর মুখেই।
রহস্যময়ী সুচিত্রা
যখন করছেন ‘সাত পাকে বাঁধা’ তখন তাঁর ঘর ভাঙছে। আর যে ছবি ‘প্রণয় পাশা’ সেটি তাঁর শেষ ছবি। তাঁর সঙ্গে হলিউড অভিনেত্রী ‘গ্রেটা গার্বো’র তুলনায় তিনি বলেছিলেন, না তা একেবারে নয়। আমি চেয়েছিলাম আপন মনে থাকতে। শুধু সাধছিলো রবীন্দ্রনাথের ‘চতুরঙ্গ’র ‘দামিনী’ করবো। সাধ তো পূরণ হয় নি। বেলুড় মঠের ভরত মহারাজ, যিনি স্বামী অভয়ানন্দ, তিনি আমার মন্ত্র গুরু। মাঝে মাঝে কাকভোরে তাঁর কাছে যেতাম, কিন্তু তাঁর চলে যাওয়ায় আর হয় না যাওয়া।
গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু
তারপর ক্রমে ‘সাগরিকা (১৯৫৬)’, ‘হারানো সুর (১৯৫৭)’ ‘পথে হলো দেরী (১৯৫৭)’, ‘রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত’, ‘ইন্দ্রাণী (১৯৫৮)’, ‘দীপ জ্বেলে যাই’, ‘চাওয়া পাওয়া (১৯৫৯)’, ‘সপ্তপদী (১৯৬০)’, ‘সাতপাকে বাঁধা’, ‘উত্তর ফাল্গুনী (১৯৬২)’, ‘গৃহদাহ (১৯৬৭)’, ‘দেবী চৌধুরাণী (১৯৭৪)’, ‘দত্তা (১৯৭৬)’ এবং শেষ বাংলা ছবি ‘প্রণয় পাশা’।
এই উল্লিখিত ছবিগুলি ছাড়াও আরও বহু ছবি হিন্দি গুলি - দেবদাস, মুসাফির, চম্পাকলি, বোম্বাই কা বাবু, সরহদ, মমতা, আঁধি। প্রথম প্রথম উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেন। এমনটা প্রথমে সুচিত্রা প্রোডিউসার কে বলেছিলেন তাঁর নাম উত্তমের আগে দিতে হবে তারপর থেকে সুচিত্রা-উত্তম।
সুচিত্রার কিছু নায়ক
পরিচালক সত্যজিৎ এসেছিলেন ‘দেবী চৌধুরাণী’র অফার নিয়ে সঙ্গে অদ্ভুত সব শর্ত। তাঁর ছবিতে কাজ করার সময় অন্য ছবিতে শ্যুটিং বন্ধ রাখতে হবে। সত্যজিৎ কেও ফিরিয়ে দেওয়া।
গ্ল্যামার গার্ল সুচিত্রা
রোমান্টিক জুটি - স্টার সিস্টেম
নিষ্পাপ কোমলতার সুচিত্রা
মুডি সুচিত্রা
আবার নিউমার্কেটে গিয়ে পাখী কিনে আনা ও শ্যুটিং করতে তিন/চার ঘন্টা লেগে গেলো। এক প্রডিউসারের না কি গোঁফ কামাতে হয়েছিলো সুচিত্রার জন্য। তাঁর কিছুতেই নাকি গোঁফটা দেখে শ্যুট করার মুড আসছিলো না।
পুরস্কার
পদ্মশ্রী সুচিত্রা সেন
আজও তাঁর চলে যাওয়ার পরও তাই হয়ে চলেছে। চলছে...
কৃতজ্ঞতা
আপনার প্রতিক্রিয়া কি?






