‘হাজী নূর মোহাম্মদ খান’, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির

বিশেষ করে মনে হতো জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়। এই পুজো দেখতে অন্য পাড়ায় যাওয়া ছাড়া গতি ছিল না। তাঁদের মনে হলো একটা ব্যবস্থা করা দরকার। ভাবনা কাজে রুপান্তরিত হল, হাজী নূরের হোটেলে বসে স্থির হলো, এবারের জগদ্ধাত্রী পুজো করা হবে সাহেব, চিনু, চিত্তরঞ্জন, বিধান, ও মনা, হাজরা সঙ্গে কেলিম শেখ, হালিম, বাদল ও ট্যাবা শেখ...

নভেম্বর 6, 2022 - 00:00
নভেম্বর 6, 2022 - 15:58
 0
‘হাজী নূর মোহাম্মদ খান’, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির
‘হাজী নূর মোহাম্মদ খান’, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির

মুসলিম পাড়ায় জগদ্ধাত্রী পুজো। মনে হবে এক গল্প। সে অনেক দিন আগের কথা। হাজী নূর মোহাম্মদ খান, তিনি এক হোটেলের মালিক। স্থানটি কৃষ্ণ নগর, পশ্চিম বাংলা। হোটেল মালিক মানুষটি ছিলেন দিলদরিয়া স্বভাবের।


হোটেলে খুব যে খরিদ্দার আসা যাওয়া ছিল, তা নয়। খু ভীড় ছিলো অঞ্চলের যতো ছেলে ছোকরার। ছিলো মনা মুখোপাধ্যায়, ছিলো কেলিম শেখের। সবাই মিলেমিশে চা পান করে। পাড়ার কোন সমস্যা হলে সবাই একজোটে সমাধানের চেষ্টা করে তাঁদের পাড়ায় কোন আনন্দ অনুষ্ঠান বা পুজো ইত্যাদির ব্যবস্থা ছিল না।


বিশেষ করে মনে হতো জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়। এই পুজো দেখতে অন্য পাড়ায় যাওয়া ছাড়া গতি ছিল না। তাঁদের মনে হলো একটা ব্যবস্থা করা দরকার। ভাবনা কাজে রুপান্তরিত হল, হাজী নূরের হোটেলে বসে স্থির হলো, এবারের জগদ্ধাত্রী পুজো করা হবে সাহেব, চিনু, চিত্তরঞ্জন, বিধান, ও মনা, হাজরা সঙ্গে কেলিম শেখ, হালিম, বাদল ও ট্যাবা শেখ।


আজ থেকে পঞ্চান্ন / ষাট বছর আগের কথা এই ঘটনার আজও চলছে সেই ধারা। বইয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সাহান শেখ, সুজয় ভট্টাচার্য, প্রবীন রায়। এঁরাই চালান এখন কৃষ্ণনগরের নিউ ক্লাবের কাজকর্ম, পুজো।


হ্যাঁ বলা হয়নি সেই পঞ্চান্ন
/ ষাট বছর আগের ক্লাবের নাম রাখা হয়েছিলো নিউ ক্লাব। শহরের অন্যতম প্রাণ কেন্দ্র কুর্চিপোতা মোড়ের প্রতিমা কে সবাই ‘সম্প্রীতি মা’ বলে ডাকেন সবাই ক্লাবের সম্পাদক হাসান শেখ বলেন, “আমাদের সম্প্রীতির পুজো।”


এই হাসান শেখ তখনকার কেলিম শেখের ছেলে। তিনি বলেন, আমি ও অনেকেই পুজোয় অঞ্জলি দিই।” ধর্মে মুসলিম হয়ে কি ভাবে ভিন্নধর্মের প্রতি আগ্রহী হলেন জিজ্ঞেস করায় বলেন, আমাদের খুব ভালো লাগে অঞ্জলি দিতে। এটি তো পুজোর অংশ!


পাশ থেকে প্রবীর রায় বলেন, মুসলিম পাড়ার সেই হাজি শেখের হোটেলের পরিকল্পিত জগদ্ধাত্রী পুজো ধর্মের গণ্ডি ছাড়িয়ে উৎসবের রুপ নিয়েছে।” ক্লাবের ১০ শতাংশ মানুষ মুসলিম। পুজোর বাজেটের দেড় লক্ষ টাকার বেশীর ভাগ এঁরাই বহন করেন।


সবাই মিলে অঞ্জলি দেন। ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে এ এক উৎসব। হাসান শেখ বলেন, একবার খরচের জন্য পুজো বন্ধ হবার উপক্রমে এঁরাই পাশে এসে দাঁড়িয়েছেনএই পুজোর পুরোহিত বলেন, এই পুজোর পুরোহিত হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হয়। আমরা মুখে সম্প্রীতির কথা বলি, ওঁরা কিন্তু কাজে দেখান।”



ধন্যবাদান্তে

সুস্মিত হালদার


আরো পড়ুনঃ পিস ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন থেকে ‘অনন্য সম্মান’ পেলেন লেখিকা স্মৃতি দত্ত

আপনার প্রতিক্রিয়া কি?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

শ্রীমতী স্মৃতি দত্ত অ্যাডভোকেট, লেখিকা, বঙ্গীয় সাহিত্যের সদস্য, কীবোর্ড প্লেয়ার, অ্যামওয়ে ব্যবসার মালিক। আমার লেখা সর্বশেষ বইয়ের নাম, ‘কেমেষ্ট্রি প্র্যাকটিক্যাল ও টি.ভি শো’ এবং ‘লেনিন সাহেবের সাথে দেখা’ বইটি Flipkart -এ নেবার জন্য ক্লিক করুন: https://www.flipkart.com/lenin-saheber-sathe-dekha/p/itmc9bfae4c39392