মেরিলিন মনরো’র জীবনী ও রুপের রহস্য জানুন

১৯২৬ সালের ১লা জুন মেরিলিন মনরো জন্মগ্রহন করেন। মেরিলিনের আসল নাম হলো নর্মা জিন মর্টেনসন। পরিবারের দারিদ্রতার কারণে মাত্র সাত বছর বয়সে তার মা তাকে আলবার্ট ও ইডা দম্পতির হাতে তুলে দেন লালন-পালনের জন্য। তার পালক বাবা-মা তাকে বেশি দিন রাখতে পারেন না তাদের কাছে অভাবের কারনে।

জুল 20, 2023 - 13:00
জুল 20, 2023 - 15:01
 0
মেরিলিন মনরো’র জীবনী ও রুপের রহস্য জানুন
মেরিলিন মনরো’র জীবনী ও রুপের রহস্য জানুন

মেরিলিন মনরো কে চেনেন তো? অনেকে তার নাম সঠিক না জানলেও বিভিন্ন মিডিয়াতে তার কোন ‘আইকনিক’ ছবি দেখেন নি – এমন মানুষ এ যুগে পাওয়া দুষ্কর! সারা বিশ্বজুড়ে কেন এত জনপ্রিয় তিনি? আর তার জনপ্রিয় হবার ইতিহাস টাই বা কী? আর কী বা রয়েছে তার রূপের রহস্য? চলুন জেনে নেয়া যাক বিনোদন জগতে তার বিশ্ব জয়ের ইতিহাস।


জীবনী

১৯২৬ সালের ১লা জুন মেরিলিন মনরো জন্মগ্রহন করেন। মেরিলিনের আসল নাম হলো নর্মা জিন মর্টেনসন। পরিবারের দারিদ্রতার কারণে মাত্র সাত বছর বয়সে তার মা তাকে আলবার্ট ও ইডা দম্পতির হাতে তুলে দেন লালন-পালনের জন্য। তার পালক বাবা-মা তাকে বেশি দিন রাখতে পারেন না তাদের কাছে অভাবের কারনে।


মনরো যে বাড়িতে থাকতেন তার পাশের বাড়িতে থাকতেন জেমস। সে সুবাদে জেমস এর সাথে আলাপ ছিল তার। ১৯ জুন সাথে পালিয়ে বিয়ে করেন। জেমস এয়ার ক্রাফট প্লান্টে কর্মরত ছিলেন। জেমসের সহায়তায় বিয়ের পর মনরো এরোপ্লেন পার্টস কোম্পানীতে শ্রমিক হিসেবে কাজ পান।


রূপের লাবণ্য আর শরীরের মোহনীয় অভিব্যক্তির জন্য অল্প কিছুদিনের মাঝেই সেখানকার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসেন মনরো। কোম্পানীর শো-গার্ল হিসেবে মডেলিংয়ের সুযোগ পান তিনি। কাজের মাধ্যমেই তার পরিচয় হয় ডেভিড কনোভার সাথে। ডেভিড একটি পত্রিকার জন্য তাকে মডেলিংয়ের প্রস্তাব দেন এবং পরবর্তীতে সেই ছবি বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সাড়া তোলে।


মডেলিংয়ের নেশায় মনরো ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলেন ডেভিডের সাথে। গ্লামার জগতে তার ঝোঁক থাকলেও সেখানে বাধা হয়ে আসেন স্বামী জেমস। “সংসার করতে হলে মডেলিং ছাড়তে হবে” - এমন পরিস্থিতিতে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জেমসের সাথে চার বছরের সংসার জীবনের ইতি টানেন তিনি।


মডেলিং ক্যারিয়ারের সাফল্যের কারণে তিনি টুইনটিথ সেঞ্চুরি ফক্সের বেন লিয়নের চোখে পড়েন। একদিন স্ক্রিন টেস্টের জন্য ডাক পড়ে তার। ব্যাস! শুরু হয়ে যায় তার অভিনয় জীবন। বেন লিয়ন ভদ্রলোক তখন তার আসল নামে সংশোধন আনেন। ‘মেরিলিন মনরো’ নামকরণ করেন তিনি।


তার বিশ্বাস ছিল, এই নামটি দর্শকদের বেশি টানবে। এই নাম তাকে বশ খ্যাতি এনে দিয়েছে। ১৯৪৭ সালে  দুটি ছবি প্রকাশ পায় যাতে খুব অল্প সময়ের জন্য পর্দায় দেখা যায় মনরোকে। কিন্তু এতে তিনি তেমন জায়গা করতে সক্ষম হননি দর্শক-হৃদয়ে।


এরপর ১৯৫০ সালে  ‘অল অ্যাবাউট ইভ’ চলচ্চিত্রের জন্য তাকে চুক্তিবদ্ধ করে। এই সিনেমায় লাস্যময়ী অভিনয়ে রাতারাতিই তারকা বনে যান তিনি। পরবর্তী দুই বছরে তার সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র রাইট ক্রস (১৯৫১), হোম টাউন স্টোরি (১৯৫১), ক্ল্যাশ বাই নাইট (১৯৫২), উই আর নট ম্যারিড (১৯৫২),  নায়াগ্রা (১৯৫৩), জেন্টলমেন প্রেফার ব্লন্ডিস (১৯৫৩), হাউ টু মেরি এ মিলিয়নেয়ার (১৯৫৩) প্রভৃতি মুক্তি পায়।


সবগুলো সিনেমাতেই তাকে যৌনাবেদনময়ী নারী হিসেবে পর্দায় দেখা যায়। পর্দায় তার খোলামেলা
পোশাক একদিকে যেমন সমালোচনার ঝড় তুলেছে, অন্যদিকে তিনি হয়ে ওঠেন লাখো তরুণের হৃদয়ের রানী।


এর ভেতর ‘জেন্টলমেন প্রফার ব্লন্ডিস সিনেমার জন্য তার অভিনয় বিপুলভাবে আলোচিত হয় এবং সর্বস্তরের মানুষের কাছে তিনি গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেন। ব্যবসাসফল এই সিনেমার আয় ছিল প্রোডাকশন খরচের দ্বিগুণ। ‘হাউ টু মেরি এ মিলিয়নেয়ার’ সিনেমাটিও বক্স অফিসে বেশ সাড়া ফেলে। সে বছরেই খ্যাতির শীর্ষে অবস্থিত মনরো প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ উন্মুক্তভাবে নিজেকে প্রকাশিত করেন ‘প্লে বয়’ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে। ১৯৬১ সালে তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র দ্য মিসফিটসমুক্তি পায়।


মৃত্যু

মনরোর অস্থির ব্যক্তিগত জীবন বেশ নজর কেড়েছিল। তিনি আসক্তি, হতাশা এবং উদ্বেগের সাথে জীবনযাপন করেছিলেন। কিন্তু একাকিত্ব আর হতাশা তাঁকে গ্রাস করেছিল। শেষে ১৯৬২ সালের ৪ আগস্ট অত্যধিক ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেন মেরিলিন মনরো। যদিও তাঁর এই মৃত্যুকে ঘিরে আজও রহস্য দানা বেঁধে আছে।


রুপের রহস্য

মেরিলিন মনরো প্রাকৃতিক ভাবে সুন্দর হলেও তার মেকাপ করার ধর ছিল অন্য রকম এই রহস্যের জন্য তিনি হয়ে ওঠেন সর্বকালের অন্যতম সুন্দরী নারীদের একজন।


. মুখে আগে Vaseline প্রয়োগ করতেন তার পর ফাউন্ডেশন লাগাতেন এই জন্য চেহারা আরো সুন্দর দেখায়। এর ফলে ক্যামেরায় তার চেহারা উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় দেখাত।

. ঠোঁটকে আকর্ষনীয় করার জন্য ৫টি ভিন্ন শেডের লিপস্টিকের ব্যবহার করতেন। বহুমাত্রিক ফলের জন্য প্রতিটি লেয়ারের পর গ্লসি শেডের প্রলেপ দেয়া হত তার ঠোঁটে। ঠোঁটের উপরিভাগে লাল রঙের গাঢ় শেড ও মাঝামাঝি স্থানে হালকা রঙের শেড ব্যবহার করতেন তিনি।

. চোখ বড় বড় করার জন্য কালো অথবা ব্রাউন কালারে আইলাইনার ব্যবহার করতেন মেরিলিন।

. মেরিলিন মনরোর চেহারার গড়ন ছিল হার্ট শেপের। এই গড়নের সাথে মানিয়ে তার ভ্রু মিনারের মত করে ছাঁটা হত, যেন কপাল বড় দেখায়; চেহারার উপরিভাগে হাইলাইটার ব্যবহার করা হত; এবং চেহারার নিম্নাংশে গাঢ় পাউডারের শেডস দেয়া হত।

. চোখের পাতায় এক ধরনের ক্রিম জাতীয় আইশ্যাডো দিয়ে নিজেকে সাজাতেন মেরিলিন। নিজের লাস্যময়ী চোখ দুটো আরো কামনাময়ী করে তুলতেন তিনি।

. মনরো সবসময় গোলাপী ব্লাশ দিয়ে নিজেকে সাজাতেন। তারূণ্যময় রূপের জন্য নিজের এমন স্টাইল পছন্দ করতেন তিনি।


মনরো মেকাপ টিপস সমুহ কিছুটা হলেও আমাদের অনেকে কাজে লাগবে। আমরা এটা মনে করি।

আপনার প্রতিক্রিয়া কি?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow