অপরূপ সৌন্দর্য্যে সজ্জিত বান্দরবানের নীলাচল
বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে নীলাচল একটি। এই নীলাচল পর্যটন কমপ্লেক্স বান্দরবান জেলা প্রশাসনের তত্তাবধানে গড়ে তোলা হয়েছে। বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে টাইগারপাড়ার পাহাড়চূড়ায় এর অবস্থান।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রাজধানী বলা হয় বান্দরবান কে। সবুজ পাহার, পাহাড়ী নদী, মেঘ এবং ঝর্ণার অপরূপ সৌন্দর্য্যে সজ্জিত এই বান্দরবান। সেই সৌন্দর্যের একটি অংশ হলো নীলাচল।
নীলাচল ও বাংলার দার্জিলিং
আপনি যখন বান্দরবানের দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়ের ঢালে আঁকা-বাঁকা রাস্তা দিয়ে যাবেন তখন আপনার চোখে পড়বে পাহাড়ী পাড়া আর রূপালী নদীগুলো। যা দেখে মনে হবে এ যেন শিল্পীরই আঁকা কোনো ছবি। এই নীলাচল পর্যটনকেন্দ্র থেকে দেখতে পাবেন পুরো বান্দরবান শহর এক নজরে। সুর্যোদয় এবং সুর্যাস্তের যে অপরূপ সৌন্দর্য্য তাও আপনি এখান থেকে উপভোগ করতে পারবেন।
এজন্য কেউ কেউ এই নীলাচল পাহাড়ি এলাকাটি স্বর্গভূমি বলেও আখ্যায়িত করে থাকেন। বিশেষকরে নীলাচলের সুর্যাস্তের দৃশ্যটি পর্যটকদের মনে স্বর্গীয় অনুভূতি এনে দেয়। এছাড়া যদি আকাশ হয় মেঘমুক্ত তাহলে পর্যটকরা এই নীলাচল থেকেই কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের অপুর্ব দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। এই নীলাচলের অপরূপ সৌন্দর্য্য বেশি উপভোগ করা যায় বর্ষা, শরৎ এবং হেমন্ত তিন ঋতুতে। এই সময়ে পর্যটকদের মনে হয় তাঁরা আকাশের মেঘগুলো ছোঁয়া যাবে।
এছাড়া নীলাচলে আছে কয়েকটি বিশ্রামাগার। এগুলো তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। এগুলো হল শুভ্রনীলা,‘ঝুলন্ত নীলা’, ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন পয়েন্ট’। কমপ্লেক্সের মাঝে বাচ্চাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা এবং বসার ব্যবস্থা রয়েছে।
এখানকার টিকেট ঘরের পাশে আছে ‘ঝুলন্ত নীলা’। আর ক্রমশ নীচের দিকে আছে আরও কয়েকটি বিশ্রামাগার। তবে এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট। এই জায়গাগুলো সাজানে হয়েছে পাহাড়ের ঢালে ঢালে। এগুলো একই রকম নয়। প্রত্যেকটি একেবারেই আলাদা।
একেকটি জায়গা থেকে সামনের পাহাড়ের দৃশ্য গুলোও দেখতে লাগে একেক রকম। কিন্তু মনে রাখবেন মূল নীলাচলের সৌন্দর্য এগুলোর চেয়েও অনেক বেশি আকর্ষণীয়। এখান থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় আরও ভালোভাবে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৬শ’ ফুট উঁচু এই জায়গা।
এখানকার রোসোর্ট নীলাচলের অন্যতম বাড়তি আকর্ষণ। এই রিসোর্টের হল নাম নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট। এই সোর্টের অতিথিদের জন্য সর্বক্ষণই খোলা এই নীলাচল পর্যটনকেন্দ্র। কিন্তু সাধারণ পর্যটকদের জন্য এ জায়গায় সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া আছে।
প্রবেশমূল্য
কোথায় থাকবেন?
আর যারা একটু কম খরচে থাকতে চান তাদের জন্য এই রিসোর্ট বাদেও বান্দরবানে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, মোটল এবং রেস্টহাউজ রয়েছে। যেগুলোর ভাড়া পড়বে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।
১. হলিডে ইন রিসোর্ট
২. হিলসাইড রিসোর্ট
৩. হোটেল ফোর স্টার
৪. হোটেল থ্রী স্টার
৫. হোটেল রিভার ভিউ
কীভাবে যাবেন?
বাসে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যেতে খরচ লাগবে এসি ৫৮০ থেকে ৭৯০ টাকা এবং নন এসি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ঢাকা থেকে বাসে সরাসরি চট্টগ্রামে আসতে লাগবে ৩৫০ টাকা। আর চট্টগ্রাম হতে বান্দরবনে আসতে খরচ লাগবে ৭০ টাকা।
আজ এই পর্যন্তই। আবারও নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের কাছে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
আপনার প্রতিক্রিয়া কি?






