নীলগিরি, বান্দরবানে অপরূপ সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি
নিজের ভেতরে থাকা একাকিত্ব দূর করতে কেই বা না চায় বলুন! সেজন্য আমরা খুঁজে বেড়ায় এমন কিছু জায়গা যেখানে গেলে কিছু মূহুর্তের জন্য হলেও নিজেকে নতুন করে ফিরে পাওয়া যায়। এমনই একটি সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবানের নীলগিরি। যার অপরূপ সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হয় সকল পর্যটক।

নীলগিরি বাংলাদেশের সবচেয়ে উচু পাহাড় চূড়া গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি বান্দরবান জেলা শহর থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই পর্যটন কেন্দ্রটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র সর্বদা মেঘমণ্ডিত হয়ে থাকার কারণ হলো এর এই উচ্চতা। আর এটাই এই পর্যটন কেন্দ্রের বিশেষ আকর্ষণ। এজন্যই নীলগিরিকে বাংলাদেশের দার্জিলিং বলা হয়। কারণ এখানে পর্যটকরা সহজেই মেঘ ছুঁতে পারেন।
নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা
পরবর্তীতে এটি একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিপূর্ণতা লাভ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের পরিকল্পনায়। বান্দরবানের আলীকদম থেকে থানচীগামী রাস্তা ধরে পাহাড়ী পথে নীলগিরি পৌঁছানো যায়। নীলগিরির অপরূপ সৌন্দর্য্যযে কেউ বিমোহিত হবে নীলগিরির দীগন্ত জুড়ে সবুজ পাহাড় আর মেঘের লুকোচুরির অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখে। এখানে আকাশ এবং পাহাড়ের মিলনমেলা দেখা যায়।
দেখা যায় কিভাবে মেঘগুলো চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক নিমেষেই মনের একাকিত্ব কখন দূর হয়ে যাবে তা কেউ বুঝতেও পারবে না। কারণ নীলগিরি গেলে মনে হবে আকাশ নিজে এসে ধরা দিয়েছে আপনার হাতে। সত্যি বলতে যে কারোরই মনে পড়বে রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত গানের লাইনটি - “নীল আকাশে কে ভাসাবে সাদা মেঘের ভেলা।” অর্থাৎ মাথার উপর নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলার খেলা আপনারা দেখতে পাবেন এই নীলগিরির পাহাড়েই।
তাই নীলগিরে বলা হয় অপরূপ সৌন্দর্য্যের এক নীলাভূমি। যার চূড়ায় দাঁড়িয়ে দেখা যায় এঁকেবেঁকে চলা নদী। অনুভব করা যায় মেঘের স্পর্শ। মনে হবে মেঘগুলো ছুয়ে গেলো আপনার চুল।
নীলগিরি তে কি কি দেখতে পাবেন?
চান্দের গাড়ি
চিম্বুক পাহাড়
শৈলপ্রপাত
হস্ত শিল্পের জিনিস
সবুজের সমারোহ
সাঙ্গু নদী
কাপ্রু পাড়া
এই সময়ে পাহাড়ি মেয়েরা তাদের বাগানের গাছপালাগুলোর যত্ন নেয় আপন মনে। এসব বাগানের মাঝে বেড়ে উঠে সেগুন, কড়ই, নিমসহ নানা জাতের ফলদ ও বনজ গাছ। এগুলোর পাশাপাশি দেখা যায় টগর, গাঁদা, বকুল, বেলি, মাধবিলতা, জবা ফুলের সমারোহ। এই ফুলের সুবাসে মন হারিয়ে যায় কোনো এক স্বর্গীয় অনুভূতির খোঁজে।
কীভাবে যাবেন?
কারণ দু’একজনের জন্য জিপ, ল্যান্ড ক্রুজার, পাইপডোরসহ রিজার্ভ গাড়িগুলোর ভাড়া অনেক বেশি লাগে। কিন্তু আপনারা যদি পরিবার-পরিজনদের সাথে দল বেঁধে একসঙ্গে নীলগিরি ঘুরে বেড়াতে চান সেক্ষেত্রে খরচটা অনেকটা কম হয়। আপনারা সিএনজি এবং মহেন্দ্র গাড়িতে করেও নীলগিরি যেতে পারেন।
এছাড়াও কম খরচে বান্দরবান-থানছি উপজেলা সড়কে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাস সার্ভিসগুলোতে করেও নীলগিরিতে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে সময়টা বেশি লাগে।
কোথায় থাকবেন?
সেখানে সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে এসব কটেজে অবস্থান ও রাতযাপনের জন্য সেনাবাহিনীর বান্দরবান ব্রিগেড হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ করতে হয়। এসব কটেজের ভাড়া ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ভাড়া একটু বেশি পড়লেও রাতে যে বিষয়গুলো উপভোগ করবেন তাতে আপনার টাকার পরিমানটা গায়ে লাগবে না।
কারণ নীলগিরির রাতের সৌন্দর্য আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। চারিদিকের হরিণ, শিয়ালসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণীর ডাক এবং পাহাড়গুলোর আলো-আঁধারির খেলা আপনার জীবনকে করে তুলবে আরও রহস্যময়।
আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
আপনার প্রতিক্রিয়া কি?






