মোবাইল ব্যাংকিং কি? বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং এবং এর ইতিহাস জানুন
মোবাইল ব্যাংকিং হলো সম্পূর্ণভাবে মোবাইল ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন প্রক্রিয়া। এর সাহায্যে গ্রাহক তার মোবাইলের মাধ্যমে দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেন সম্পূর্ণ করতে পারবেন। তার সাথে বিভিন্ন রকম ডিজিটাল সেবা পরিষেবা ভোগ করতে পারবেন।

মোবাইল ব্যাংকিং কি?
১৯৯৯ সালে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এসএমএস এর মাধ্যমে শুরু হয়। তাই এটিকে প্রথম দিকে এসএমএস ব্যাংক নামে অভিভিত করা হত। কিন্তু সময়ের সাথে প্রযুক্তির আধুনিকতায় বাড়তে থাকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মান। সেই প্রথম দিকে মোবাইল ব্যাংকিং এর সেবা সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোতে। এর প্রেক্ষিতে ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া সেকে টেলিকম অবলাল রশ্নি ভিত্তিক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে কিন্তু তা সফলাতার মুখ দেখতে পারেনি।
এর ধারবাহিকতায় তারা আবার এলজি টেলিকম, আইসি চিপ ভিত্তিক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করতে থাকে। অপর দিকে জাপান ২০০৪ সালে ‘NTT Docomo’ ফেলিকার চিপ ব্যবহার শুরু করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিতে থাকে এবং তা ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
২০০৬-৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে (wachovia) ব্যাংক। এর প্রেক্ষিতে মাত্র ৬ মাসে তাদের ডিজিটাল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানটি ৫ লক্ষাধিক গ্রাহক নিজেদের করতে সক্ষম হয়। তার ধারবাহিকতায় ২০০৯-১০ সালে আসে মোবাইল ব্যাংকিং এ যুগান্তকারী পরিবর্তন। সে সময়ে পল জবস এর অ্যাপল কোম্পানি আইফোনে এবং অ্যান্ড্রয়েডে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ নির্মাণ করে।
কিন্ত সেসব অ্যাপ এর কার্যক্রম ছিলো বেশ সীমিত পর্যায়ের। সেখান থেকে এক যুগ পাড়ি দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং পৌঁছেছে আজকের এই বৈশ্বিক মোবাইল ডিজিটাল আর্থিক প্রদানে।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং এর কার্যক্রম
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং এর উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান। এবং তিনিই এখানে প্রথম লেনদেন করেন। তিনি এখানে ২০০০ টাকা জমা ও ১৫০০ টাকা উত্তোলন করেন। ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এর লক্ষ্য ছিলো যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাদের সেবা পৌঁছিয়ে দেবে।
২০১১ সালে ডাচ বাংলা ব্যাংক তাদের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করলেও ২০১২ সালে এসে। আরো ১০টি ব্যাংক এ সেবা চালু করে। কিন্ত ডাচ বাংলা ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক অন্য সব মোবাইল ব্যাংক এর থেকে ছিলো অনেক এগিয়ে। এই ১০ টি ব্যাংক বাদেও আরো ৭ টি ব্যাংকের আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স লেনদেন এর অনুমতি ছিলো।
আর প্রায় ১০ বছর পরে আজকের এই দিনে বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংক দেশের বিভিন্ন জায়গায় অলিতে গলিতে পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন রকম মোবাইল ব্যাংক তাদের গ্রাহক কে ডিজিটাল সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সমূহ
১. বিকাশ
২. রকেট
রকেট কে গ্রাহকেরা পছন্দ করে। প্রধান কারণ হলো, এর বিল প্রদান সেবার জন্য। দেশের বিভিন্ন কল-কারখানা, শিল্প-প্রতিষ্ঠান রকেট এর মাধ্যমে শ্রমিকদের টাকা প্রদান করে থাকে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি রকেট এর মাধ্যমে দিতে হয়।
৩. নগদ
সরকার শাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এটি কে তার মুনাফা নিয়ে ভাবতে হয় না। তাই নগদ হাজারে মাত্র ৯.৯৯ টাকা ক্যাশ আউট চার্জ কাটে। এর জন্য বড় অংকের লেনদেন এর জন্য গ্রাহকরা নগদ কে বেছে নায়। এবং তাদের সেবার মান ভালো হওয়ার দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ মোবাইল ব্যাংক হিসেবে পরিনত হয়েছে নগদ।
বর্তমানে তাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। এত গ্রাহক অল্প সময়ে অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ঘরে বসে নগদ অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা প্রদান এর জন্য। বর্তমান সময়ে তারা বিকাশ কে চালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
৪. এম ক্যাশ
ক্যাশ আউট চার্জের জন্য এটি একটি আলাদা উপায় ব্যবহার করে থাকে। ১-১০০০ টাকা ক্যাশ আউট করতে আপনাকে ১০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে। আর যদি আপনি ১০০০- ২৫০০ টাকা ক্যাশ আউট করতে চান তাহলে আপনাকে ১% ফি প্রদান করতে হবে।
৪. ইউপে/উপায়
এই উপায় অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনি মোবাইল ব্যাংকিং সেবার পাশাপাশি ইউসিবি এর মূল ব্যাংকিং সেবাও নিতে পারবেন। প্রয়োজনে আপনি উপায় থেকে এটিএমে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন পাশাপাশি অন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে পারবেন। উপায় সল্প সময়ে অনেক সেবা প্রদান করার চেষ্টা করছে।
৫. শিওর ক্যাশ
শিওর ক্যাশ অ্যাপ টি ফিনটেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রাহকদের বেশ উন্নত মানের সেবা প্রদান করছে।
৬. মাই ক্যাশ
৭. টি ক্যাশ
এখানে বিভিন্ন রকম মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে বলা আছে আপনি আপানার সুবিধামতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবাটি ব্যবহার করতে পারবেন।
মোবাইল ব্যাংকিং এর ইতিহাস
সাল ২০১০ এর আগে মোবাইল ব্যাংকিং প্রায় সময়ে এস এম এস বা মোবাইল ওয়েব মাধ্যমে পরিচালিত হতো। আইফোন প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ উদ্ভাবন করে তার সাথে গুগল এর অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন তাদের বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ তৈরি করেন।
মোবাইল এর ডিজিটাল লেনদেন ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর ভিত্তিতে বিভিন্ন ব্যাংক তাদের নিজস্ব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে তাদের গ্রাহককে ডিজিটাল সেবা প্রদান করতে থাকে। এই আপ্লিকেশন গুলা জেসএসপিতে একটি মডিউল আপ্লিকেশন যেমন জে১ এমই এবং অন্য একটি মডিউল জে২ এমই ফাংশন নিয়ে গঠিত হয়।
মাপা রির্চাস সাম্প্রতিক সময়ে জানা যায় যে, গ্রাহকরা তাদের যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে সেটি পরির্দশন এর পর এক তৃতীয়ংশ গ্রাহক মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আপ্লিকেশন টি পছন্দ করে থাকেন। এই ছিলো আমার হাতে থাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
সল্প সময়ের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং হতে পারে একটি সেরা উপায় তাই আপনি উপরের উক্ত তালিকা থেকে যেকোন একটি ব্যবহার করতে পারবেন আপনার সুবিধামত।
আর বিভিন্ন রকম মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে তথ্য পেতে ‘দ্য ব্যাকস্পেস জার্নাল’ এর সাথেই থাকুন। আর উপরোক্ত মোবাইল ব্যাংকিং এর কোন ব্যাংকিং টি আপনি ব্যবহার করেন তা মন্তব্যের ঘরে আপনার মূল্যবান মন্তব্য প্রকাশ করতে পারেন। ধন্যবাদ
আপনার প্রতিক্রিয়া কি?






