চোখের যত্নে কি কি করণীয়? বিস্তারিত জানুন

আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো চোখ। তাই সব ধরনের ঝুঁকি এবং বিপদ থেকে এই বিশেষ অঙ্গটিকে নিরাপদ রাখা উচিত। আমরা যেমন আমাদের ত্বকের যত্ন নেই, চুলের যত্ন নেই ঠিক তেমনি চোখের যত্নও নেয়া উচিত। চোখ শুধু জগৎ দেখারই কাজ করে না।

মার্চ 30, 2023 - 19:00
এপ্রিল 11, 2023 - 18:14
 0
চোখের যত্নে কি কি করণীয়? বিস্তারিত জানুন
চোখের যত্নে কি কি করণীয়? বিস্তারিত জানুন | Image by wirestock on Freepik

আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো চোখ। তাই সব ধরনের ঝুঁকি এবং বিপদ থেকে এই বিশেষ অঙ্গটিকে নিরাপদ রাখা উচিত। আমরা যেমন আমাদের ত্বকের যত্ন নেই, চুলের যত্ন নেই ঠিক তেমনি চোখের যত্নও নেয়া উচিত। চোখ শুধু জগৎ দেখারই কাজ করে না। এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি মানুষের সৌন্দর্যকেও অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। তাই এই চোখের যত্নে কিছু টিপস্ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।


১. নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ

চোখের সমস্যা এড়াতে খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই ছোটবেলা থেকেই নিয়মমাফিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। শিশুদের ছয় মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধই যথেষ্ট। কিন্তু এরপর থেকে শিশুকে ধীরে ধীরে বাড়তি খাবারে অভ্যস্ত করতে হবে। শাকসবজি যেমন পাকা পেঁপে, গাজর ইত্যাদি ফল পরিমিত পরিমাণে খাওয়াতে হবে। শুধু শিশুই নয়, পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রেও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের ধর প্রায় একই।


ছোট মাছ, সবুজ শাকসবজি এবং বিভিন্ন ধরনের ফল চোখের জন্য বিশেষ উপকারী। তাই এই খাদ্যাভ্যাসের দিকে খেয়াল রাখা উচিত।


২. ঘুম ও বিশ্রাম

শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে নিয়মিত ঘুম এবং বিশ্রামের প্রয়োজন। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে কমপক্ষে দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম প্রয়োজন। তবে এর বিভিন্নতা দেখা যায়, ব্যক্তির চাহিদা অনুযায়ী। যেমন, ৪৫ মিনিট বা ১ ঘণ্টা পরপর ১০ থেকে ১৫ মিনিটের বিরতি নেয়া উচিত কায়িক শ্রমের ক্ষেত্রে। এতে শুধু চোখই নয়, বরং পুরো শরীরই ভালো থাকে।


আবার কম্পিউটারের কাজের ক্ষেত্রে প্রতি ২০ মিনিট পরপর ২০ সেকেন্ডের বিরতি নেওয়া উচিত। এবং এই বিরতি চলাকালীন কমপক্ষে ২০ ফুট দূরে তাকাতে হবে। এতে চোখের বিশ্রামের পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন, ঘাড় ও পিঠের ব্যথা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।


৩. নির্দিষ্ট দূরত্বে টেলিভিশন ও কম্পিউটারের মনিটরে অবস্থান করা

মনিটর থেকে চোখের এই দূরত্ব নির্ভর করে কম্পিউটারের আকারের ওপর। সাধারণত চোখকে ৩ ফুট দূরত্বে রাখা উচিত কম্পিউটারের মনিটর হতে। এবং টেলিভিশনের মনিটর থেকে চোখের দূরত্ব ১০ ফুট হওয়া উচিত। শিশুরা অনেক সময় খুব কাছে থেকে টেলিভিশন দেখে থাকে। এটি মোটেও ভালো নয়। সেজন্য এমনটি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ।


৪. তীব্র রোদ এবং ভাইরাল ইনফেকশন থেকে বাঁচার উপায়

অনেক সময় চোখ শুষ্ক হয়ে যায় তীব্র রোদের কারণে। এ সময় চোখে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা এড়ানোর জন্য রোদে ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলা যেতে পারে। এছাড়া আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষার জন্য সানগ্লাসের ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা বেশ উপকারী এবং যারা পাওয়ার-চশমা ব্যবহার করে তারা ফটোসান ব্যবহার করতে পারে। এতে এই ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করা সম্ভব।


আবার দেখা যায় খাবার ও ধুলোবালির মাধ্যমেও অ্যালার্জি জনিত বা ভাইরাল ইনফেকশন হতে পারে। এক্ষেত্রে, সানগ্লাস ও ছাতা ব্যবহার করা উচিত এবং বাইরে থেকে এসে চোখ পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করা উচিত। ভাইরাল ইনফেকশন হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। এবং ব্যবহৃত রুমাল বা অন্যান্য জিনিস আলাদা ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে, যেন অন্যদের চোখে রোগের সংক্রমণ না হয়।


৫. কন্টাক্ট লেন্সের ব্যবহার

আজকাল লক্ষ করা যায়, মানুষ চশমার পরিবর্তে কন্টাক্ট লেন্স বেশি ব্যবহার করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগীর চোখের প্রয়োজনে চিকিৎসক তা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও অনেকে প্রসাধন সামগ্রী হিসেবে কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করে থাকেন।


এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহার এবং ব্যবহার শেষে জীবাণুমুক্ত করে সলুশনে ডুবিয়ে লেন্স সংরক্ষণ করা উচিত। তবে খেয়াল রাখতে হবে চোখ লাল হওয়া, পানি পড়া, ময়লা জমা - এ জাতীয় উপসর্গ দেখা দিলে লেন্স ব্যবহার করা যাবে না। এবং দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।


৬. চোখের সমস্যা বোঝার উপায়

প্রাথমিকভাবে চোখে সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে যেটি মনে হয়, তা হলো দৃষ্টি কমে যাওয়া। সাধারণত চোখ থেকে পানি পড়া, ময়লা জমা, চোখ ব্যাথা বা লাল হওয়া এসব উপসর্গের ভিত্তিতে চোখের সমস্যা চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।



বিশেষ সতর্কতা

চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কখনই আই ড্রপ ব্যবহার একেবারেই উচিত নয়। মনে রাখতে হবে, আই ড্রপ খোলার এক মাসের মধ্যেই তা ব্যবহার করতে হবে এবং এরপর  ফেলে দিতে হবে। সবারই অন্তত বছরে একবার চোখ পরীক্ষা এবং চোখের যেকোনো সমস্যায় অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।


আজ এই পর্যন্তই।
সবাই ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।

আপনার প্রতিক্রিয়া কি?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

সেলিনা আক্তার শাপলা আমি একজন লেখিকা ও ব্লগার। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছি। এবং ম্যানেজার, দি ব্যাকস্পেস জার্নালে। লেখালেখির যে কোনো প্রয়োজনে আমাকে সরাসরি ই-মেইল করুন: shelinaaktershapla123@gmail.com