বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বিভিন্ন রকম। যেমন আমেরিকায় ৫৯ বছর বয়সেও একজন নাগরিক সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেন। আবার শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ায় সরকারি চাকরিতে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ বছর।
ভারতে এই বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৪৫ বছর। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর। মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক আর বিশেষ কোটার ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা ৩২ বছর। সরকারি ছাড়াও আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানেও একই বয়সসীমা অনুসরণ করা হয়।
দেশের গড় আয়ু যখন ৪৫ বছর ছিল, তখন চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছিল ২৭ বছর, যখন ৫০ বছর ছাড়ালো, তখন প্রবেশের বয়স ৩০ বছর হলো। বর্তমানে গড় আয়ু ৭২ হলে চাকরিতে প্রবেশের বয়স কত হওয়া উচিত?
তার আগে চলুন জেনে নেয়া যাক বিশ্বের কয়েকটি দেশের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা।
ভারত
ভারতে রাজ্যভেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৪৫ বছর৷ পশ্চিমবঙ্গে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪০ বছর।
শ্রীলংকা
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৪৫ বছর।
তাইওয়ান
তাইওয়ানে বয়স সর্বোচ্চ ৩৫ বছর হলেও সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ার সুযোগ থাকে।
ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ায় সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ার সর্বোচ্চ বয়স ৪৫ বছর।
কাতার
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর।
সুইডেন
সেখানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ ৪৭ বছর পর্যন্ত থাকে।
ফ্রান্স
ফ্রান্সে ৪০ বছর বয়স হলেও কেউ সরকারি চাকরি পেতে পারেন৷ ইতালি: ইতালিতে ৩৫ বছর পর্যন্ত কেউ সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯ বছর বয়সেও একজন নাগরিক সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে পারেন৷ কানাডা: এই দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ ৪৭ বছর হলে শেষ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর৷ সহকারী বিচারক এবং বিসিএস স্বাস্থ্য তথা সরকারি ডাক্তারদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২। বিভিন্ন কোটার ক্ষেত্রেও এই বয়সসীমা ৩২ বছর।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বর্তমান বয়সসীমা বিশ্বের ১৬২টি দেশের সর্বনিম্ন বয়সের চেয়েও পাঁচ বছর কম। হাতে গোনা বিশ্বের কয়েকটি দেশে চাকরির সর্বনিম্ন বয়স ৩৫ বছর হলেও বাংলাদেশে তার চেয়েও কমিয়ে ৩০ বছরে রাখা হয়েছে।
শেষকথা
দেশের গড় আয়ু, মাথাপিছিু আয়সহ সার্বিক সূচক বাড়লেও বাড়ানো হয়নি এ বয়সসীমা। যা দেশের লাখো বেকারের কান্নার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের সবকিছু যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন চাকরির এ বয়সসীমা ৩০ বছরে আটকে রাখাকে নিজেদের জন্য দূর্ভাগ্য বলে মনে করছেন চাকরি প্রত্যাশি হাজারো শিক্ষিত যুবক।
চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ বছর, এ সীমানা প্রাচীর বাংলাদেশের লাখো ছাত্র সমাজকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তারা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চাকরির সর্বোচ্চ বয়স ৩৫ করার দাবি সম্পূর্ণ যৌক্তিক, এবং এই দাবি মেনে নেওয়া বর্তমান সময়ে সরকারের একটি নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি।
আরো পড়ুনঃ বুদ্ধিজীবী কে? বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের মনন